ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনা ;ভাইকে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিতে গিয়ে প্রাণ গেল আফজালের
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:সৌদিপ্রবাসী সাদ্দাম হোসেনের বিমানের ফ্লাইট ছিল সোমবার রাত ৯টায়। তাকে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিতে এগারোসিন্ধুর গোধূলি ট্রেনে ঢাকায় যাচ্ছিলেন ছোট ভাই আফজাল হোসেন। কিন্তু সেই যাত্রা রূপ নিল অন্তিমযাত্রায়। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন আফজাল হোসেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন সাদ্দাম হোসেনও।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকালে ভৈরবের জগন্নাথপুর রেলক্রসিং এলাকায় যাত্রীবাহী এগারোসিন্ধুর ট্রেনকে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেন। এতে এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেসের তিনটি বগি যাত্রীসহ উল্টে যায়। দুর্ঘটনায় ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং আহত হয় অর্ধশতাধিক।
নিহত আফজাল হোসেন ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে। ঢাকা কলেজের মাস্টার্স পড়ুয়া আফজাল ভৈরব আগানগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
রাধানগরের মো. সৌরভ অপু বলেন, আফজালরা চার ভাই। বড় ভাই সাদ্দাম ও তার আরেক ছোট ভাই আরিফ সৌদিতে থাকেন। সাদ্দাম কিছুদিনের জন্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। ছুটি শেষে সোমবার সৌদির যাওয়ার উদ্দেশে এগারোসিন্ধুর ট্রেনে বিমানবন্দর যাচ্ছিলেন। রাত ৯টায় তার ফ্লাইট ছিল। বড় ভাইকে বিদায় দিতে গিয়েছিলেন আফজাল। কিন্তু ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।
তিনি বলেন, আফজালের বাবা কৃষক আবদুল মান্নান ও তার প্রবাসী ভাইদের স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষে সে সরকারি চাকরি করবে। তাকে পরিবারের সবাই খুব আদর করতেন এবং তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সবাই খুব চিন্তা করতেন। তার পড়াশোনায় যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য প্রবাসী ভাইয়েরা নিয়মিত টাকাপয়সা দিতেন।
আক্ষেপ করে তিনি আরও বলেন, এখন এমন একটা অবস্থা, আফজাল যাকে বিদায় দিতে গিয়েছিল, সেও মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বড় ভাইয়েরও বিদেশ যাওয়া হলো না, আর ছোট ভাইটাও চলে গেল পরপারে। এ অবস্থায় তাদের পরিবারসহ গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।