ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত
‘নারীর জন্য বিনিয়োগ সহিংসতা প্রতিরোধ’এবং ‘শেখ হাসিনার বারতা নারী-পুরুষ সমতা’এ তিপাদ্যকে সামনে রেখে ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ এবং বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপিত হয়।
আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচিত জয়িতাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘জয়িতা অন্বেষণ বাংলাদেশ’শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় সদর উপজেলা ও ময়মনসিংহ জেলা পর্যায়ে ৮জন জয়িতার মাঝে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ শামীম হোসেন, সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজনীন সুলতানা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার কামাল পাশা এবং বিদ্যাময়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাসিমা আক্তার।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মোট ৮জন নারীকে জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তারা হলেন চম্পা বর্মন, রাজিয়া আক্তার, মোসা: নুরুন্নাহার, শামীমা আক্তার, রেজিনা আক্তার চৌধুরী, সালমা বেগম, সুমি আক্তার ও মোসাঃ ফজিলাতুন্নেছা। আলোচনা সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচিত জয়িতা ৮ নারী তাদের জীবন সংগ্রামের বাধা-বিপত্তি ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে কীভাবে সফল হয়েছেন তা বর্ণনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্ততায় জেলা প্রশাসক বলেন, যে নারীরা ধারাবাহিক স্রোতের বাইরে গিয়ে জীবন সংগ্রাম করে সফল হয়েছেন তারাই মূলত জয়িতা। জীবনে চলার পথ যাদের ভঙ্গুর সে ভঙ্গুর পথটাই সংগ্রাম করে তাদের অনুকূলে এনেছেন। কোনো ধর্মেই নারীদের নির্যাতনের কথা বলা হয়নি বরং ইসলামে নারীর সম্মান সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে। নিগৃহীত করার কথা বলা হয়নি।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, এখন একটা পরিবর্তন হওয়া দরকার। এখন আত্মোপলব্ধি করার সময় এসেছে। প্রতিটি পরিবার থেকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। নারীর উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করেছে। যেমন- কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল, মাতৃত্বকালীন ছুটি, ক্ষুদ্র ঋণ, ডে কেয়ার সেন্টার, নারীদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করাসহ বিভিন্ন সুবিধার ব্যবস্থা। এ দেশ এখন পিছিয়ে নেই। আমরা নারী-পুরুষ মিলে ২০৪১ সালের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবো। সরকার স্বপ্ন দেখিয়েছে এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নে রুপ দিচ্ছে।
মহিলা অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজনীন সুলতানা বেগম রোকেয়ার জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া নারী মুক্তির স্বপ্নের কথা বলে গেছেন তার গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধসহ বিভিন্ন লেখনীতে। শুধু লেখনীতেই নয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ নারী শিক্ষার প্রসারে তিনি কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। বাংলা নারী জাগরণের পথিকৃৎ এই মহীয়সীর জন্ম ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। ১৯৩২ সালের এই দিনে মারা যান তিনি। তাই এদিনটি রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
আলোচনা শেষে ৮ জন জয়িতার হাতে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।
এসময় বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভিন্ন নারী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পিআইডি, ময়মনসিংহ