অন্যান্যজাতীয়রাজনীতি

শিক্ষাদিবসে ময়মনসিংহে জাতীয় ছাত্রদলের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর ৬৪তম শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহে জাতীয় ছাত্রদলের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় ছাত্রদলের জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক ও মুক্তাগাছা উপজেলা কমিটির অন্যতম নেতা নাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মুক্তাগাছা চৌরঙ্গী মোড়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি পরিচালনা করেন সংগঠনের অন্যতম নেতা মার্জিয়া আক্তার। সভায় উপস্থিত থাকেন জাতীয় ছাত্রদলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা আক্তার শরীফা এবং দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন ও উপজেলা কমিটির আহবায়ক সোহেল মিয়া এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা কমিটির আহবায়ক বাবলি আকন্দ ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৬২ সালে তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরাচারী সরকারের শরীফ শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। এই আন্দোলনে টঙ্গীতে একজন শ্রমিকসহ হাইকোর্টের সামনে ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা ও বাবুল শহীদ হোন। তখন ছাত্রসমাজের দাবি ছিল একটি গণতান্ত্রিক, গণমুখী ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এই দাবিতে ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রসমাজ অংশগ্রহণ করে। কিন্তু ছাত্রসমাজের আকাংখার প্রতিফলন না ঘটে ৭১ সালে নয়া ঔপনিবেশিক ও আধা-সামন্তবাদী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়। ফলে ছাত্রসমাজের একটি গণমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় মুক্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে উপমহাদেশে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি পদক্ষেপে এদেশের ছাত্রসমাজ গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছে। অথচ এর বিপরীতে দেখা যাচ্ছে ছাত্রসমাজের মধ্যে একটি অংশকে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল গোষ্ঠী তাদের হাতের ক্রীড়ানক হিসেবে ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ হাসিল করছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচারবিরোধী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ব্যবহার করে এদেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দালাল ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এই সরকার সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে জাতীয় স্বার্থবিরোধী গোপন চুক্তি করাসহ দেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করে চলছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি তৈরি হয়েছে। সভায় নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের ডামাডোল তৈরি করে দেশে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বিষয়ে ছাত্রসমাজের মনোযোগ সরানোর চেষ্ঠা চালিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়ভাবে ছাত্রআন্দোলনের প্রভাব তৈরি করলেও মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ও দেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার ব্যাপারে ডাকসু নিরব থাকছে। ফলে ছাত্রসংসদে প্রতিক্রিয়াশীল ছাত্রনেতৃত্ব তৈরি করে সাম্রাজ্যবাদের পরিকল্পনা হাসিল করে নেয়ার তৎপরতাই সরকার চালাচ্ছে বলে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন। এর বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রবল ছাত্রআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ আহবান জানান।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)