শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দাদন ব্যবসায়ীদে খপ্পরে যুবকের আত্মহত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার
মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দাদন ব্যবসায়ীদে খপ্পরে যুবকের আত্মহত্যার মামলার প্রধান আসামী মো. মোশারফ হোসেন(২৫)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মোশারফ উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের পূর্ব গজারীকুড়া গ্রামের মো. মুনছর আলীর ছেলে।
থানার সুত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই হাবিবুর রহমান ও এএসআই আমিনুল ইসলাম সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় ভারুয়া বাজার থেকে উক্ত মামলার প্রধান আসাী মোশারফ হোসেনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত মোশারফকে রবিবার দুপুরে আদালতে সোপদ করা হয়েছে।
পলাতক অন্য আসামীরা হচ্ছেন, পূর্ব গজারীকুড়ার
গ্রামের আবু সামার ছেলে(২২), ঝিনাইগাতী গ্রামের মুছা কুলির ছেলে সেলিম মিয়া(৪৫), নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী গ্রামের রিয়াজুল মুন্সির ছেলে আতিক মিয়া(২৫)।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৩ মে তারিখে দায়ের করা মামলাটি আমি গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে এজাহারভুক্ত আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখে ২ সপ্তাহের মধ্যে মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতে সোপর্দ করি। অন্য আসামীদেরকেও ধরতে সাড়াশী অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য যে, গত ১৩ মে বৃহস্পতিবার উপজেলার গৌরীপুর ইউনিনের পুব গজারীকুড়া গ্রামের আনিছুর রহমান উরফে আহালুর ছেলে লেবু মিয়া(১৮) দাদন
ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে আত্মহত্যা করার মতো ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, লেবু মিয়া তার অভিভাবকদের অজান্তে স্থানীয় যুবক মোশারফ ও রেজাউলের মাধ্যমে বেশ কিছুদিন পুর্বে মাসিক লাভে দুই সুদখোরের কাছা থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহন করেন। কিন্তু লেবু মিয়া ওই টাকার সুদ আসল কোনটাই পরিশোধ করতে পারেননি। লেবু মিয়া বেশ কিছুদিন ঢাকায় অবস্হান করে গত প্রায় এক পুর্বে বাড়ি আসে। লেবু মিয়ার বাড়ীতে আসার সংবাদ পেয়ে গত ১৩ মে বৃহস্প্রতিবার দুপুরে মোশারফ, রেজাউলসহ আরো দুই পাওনাদার লেবু মিয়াকে মোশারফের বাড়িতে ডেকে এনে তাকে মারধর করে। এসময় লেবু মিয়া সুদখোরদের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিকালে তাদের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি চলে আসে। লেবু মিয়ার দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিকালে ওই চারজন টাকা নিতে লেবু মিয়ার বাড়ি আসে। ঘটনাটি লেবু মিয়ার অভিভাবকরা জানতে পেরে পাওনাদারদের কাছে এক সপ্তাহের সময় চেয়ে টাকা পরিশোধের দায়িত্ব নেন। কিন্তু পাওনাদাররা এতে রাজি না হয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, লেবু মিয়া বিষ পান করে গুরুতরভাবে আহত হয়। আহত লেবু মিয়াকে ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর অবস্হার অবনতি দেখে তাকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ লেবু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহত লেবু মিয়ার পিতা আনিছুর রহমান বাদি হয়ে ৪ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।