স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে প্রচারণা ; ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
স্টাফ রিপোর্টার ঃ নৌকার বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর ভূমিকা একাধিক মহলে সমালোচিত হচ্ছে। গত শুক্রবার দুপুর ১২.৫০ মিনিটে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীম এর ট্রাক প্রতীকের প্রচারণা সভার ছবি ফেইসবুকে পোস্ট হয়। ছবিতে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীম এক হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে আরেক হাত উপরে উঠিয়ে রেখেছেন বক্তব্য দেয়ার ভঙ্গিতে আর তার পাশে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল তার দুই হাত দিয়ে খেলনা ট্রাক ধরে মাথার উপরে রেখেছেন। এই ছবি পোস্ট হওয়ার পর পরই সমালোচনার ঝড় বইছে। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ হচ্ছে সাধারণ সম্পাদক। একটি জেলার খোদ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদক এর পদে থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত দলীয় বিশৃঙ্খলারই শামিল। নৌকার বিরুদ্ধে যাওয়া মানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার অবমাননা করা।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা- কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অনৈক্য। বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথেই ভাবছেন কর্মীরা। আওয়ামীলীগের কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি হচ্ছে। নৌকা নাকি ট্রাক। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মী জানান, নৌকা আবেগের প্রতীক। নৌকাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যেই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচার প্রচারণা করা প্রয়োজন। কিন্তু সভাপতি ও সেক্রেটারির নৌকার বিপক্ষে যাওয়ায় আমরাই রীতিমতো অবাক হচ্ছি। আদর্শ না টাকা! প্রশ্নটা সামনে আসছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি এড আব্দুর রাজ্জাক জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা এঁর সিদ্ধান্তে নৌকাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নিবিড়ভাবে জেলার সকল নেতৃবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছে বলেই আমি বিশ্বাস করি। তবে এর বাইরে গিয়ে যদি কেউ অন্য প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালায় সেই দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত বিষয়। এর দায় জেলা আওয়ামী লীগ নিবে না।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ফারুক আহমেদ খান বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারির পরে সভানেত্রী সিদ্ধান্ত নিবেন। কিন্তু বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এটা করা নৈতিকতাবিহীন কাজ। আওয়ামী লীগের নৌকা হচ্ছে আমাদের জীবন্ত একটা প্রতীক। একটা দায়িত্বশীল পদে থেকে তাঁর এহেন কাজ করার পর এই পদ আঁকড়ে ধরার কোন মানে নেই।
কেন নৌকার পক্ষে প্রচার প্রচারণা না করে সাংগঠনিক বিধি অমান্য করে ট্রাকের পক্ষে তার অবস্থান! এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল তাঁকে ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬.৩৫ থেকে রাত ৭.১৮ মধ্যে কল দিলে তিনি রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে জানতে কল দেয়া হয় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমকে। তিনি ফোন রিসিভ করেও কেটে দেন। আবারও কল দিলে তিনি পরে আর রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে ময়মনসিংহ ৪ সদর আসনে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এঁর ছেলে ও ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত এবং তার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমিনুল হক শামীম।