কিশোরগঞ্জে পোকা দমনে পার্চিং কৃষকদের আশার আলো
আমিনুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জ জেলায় ধানের ক্ষতিকর পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। এতে কীটনাশক ছাড়াই ক্ষতিকর পোকা দমন করা সম্ভব। পার্চিং পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব এবং লাভজনক। এ পদ্ধতি গ্রহণে কৃষি বিভাগ কৃষকদেরকে সচেতনতা সৃষ্টি ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
জানা গেছে পাচিং সাধারণত দুই প্রকার। ডেড পাচিং ও লাইভ পার্চিং। মরা ডালপালা ও বাঁশের কঞ্চি জমিনে পুঁতে দিলে হয় ডেড পার্চিং, লাইভ পাচিং হলো জীবন্ত ধইঞ্চা গাছ জমিতে পুতে দিলে সেগুলোর ওপর বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরা বসে ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। ফলে এ পদ্ধতির মাধ্যমে কীটনাশকের ব্যবহার কমে আসে এবং ফসলের উৎপাদন খরচ কমে। পার্চিং ব্যবহারে বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখা সম্ভব হয়। পোকার বংশবিস্তার কমানো যায়।
সরজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার আমন ধানের জমিতে দেখা যায় পার্চিংয়ের দৃশ্য। এবিষয়ে কথা মাইজখাপন ইউনিয়নের চৌধুরী হাটের কৃষক সাইদুর রহমান কাঞ্চনের সাথে। তিনি জানান, তিনি তার আমন জমিতে পার্চিং পদ্ধতি শুরু করেছেন। প্রতিবছরই তিনি এ পদ্ধতি অবলম্বন করেন। এতে কীটনাশক কম লাগে ফলে খরচ কম হয়।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জগদল ব্লকের নান্দানিয়া গ্রামের কৃষক মো. রাসেল মিয়া জানান, পার্চিং ব্যবহার করে ক্ষতিকর পোকা দমন করা সহজ হয়েছে।
সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের গোয়ালাপাড়া গ্রামের চাষি মাহবুব আলম বলেন,আমাদের নীলগঞ্জ-তাড়াইল সড়ক সংলগ্ন মহিনন্দ ব্লকে কয়েক একর জমিতে পার্চিং পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। আমনের জমিতে পাটশোলা ও বাশের কঞ্চি পুতে দিয়েছি। এতে স্থানীয় নাম হেচ্চুয়া পাখি খুঁটিতে বসে ক্ষতিকর পোকা মাকর খেয়ে ফসলের উপকারীতা করছে।
মহিনন্দ ভাস্করখিলা ব্লকের কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসার সাবিহা সুলতানা বলেন, পার্চিং ব্যবহারের ফলে জমিতে রাসায়নিক সারের পরিমান কম লাগে এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখা যায়। একটি ফিঙে পাখি সারা দিনে কমপক্ষে ৩০টি মাজরা পোকার মথ, ডিম, পুত্তলি খেয়ে থাকে। একটি পাখির দ্বারা প্রতি মাসে হাজার হাজার পোকা ধ্বংস করা সম্ভব।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ সাদিকুর রহমান বলেন, ধানের জমিতে ডালপালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে দিলে ক্ষতিকর পোকামাকড় পাখি খেয়ে ফলে। ফলে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ অনেকাংশে কমানো যায়। পার্চিং পদ্ধতি খুব কার্যকর। এই পদ্ধতি কাজে লাগালে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায়। উৎপাদন খরচও কমে। বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখা যায়। এ পদ্ধতি ক্রমেই বাড়ছে