ধানীখোলা উচ্চ বিদ্যালয়: অনিয়মের অভিযোগে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত
ত্রিশাল প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ধানীখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতি বানানোর পাঁয়তারা করায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছিলেন সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক প্রার্থী। অদৃশ্য কারণে অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। সোমবার নির্বাচন চলাকালে ভোক্তভোগি ওই প্রার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
জানা গেছে, ধানীখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে গত ২০ আগস্ট চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়। মৃত আবুল হাসিমের নামসহ একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার তালিকাভুক্ত হয়েছে। অসংগতিপূর্ণ ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি একাধিক বৈধ ভোটারের নাম। মনোয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৯ আগস্ট দুপুর একটা পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই উম্মে কুলছুম নামে এক সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক প্রার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকবাল বাহারের কাছে মনোয়নপত্র জমা দেন। উম্মে কুলছুমের পরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েও অভিভাবক সদস্যপ্রার্থী আবদুল হান্নান নির্বাচনে অংশগ্রহনের সুযোগ পান। নিদ্রিষ্ট সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি এমন কারন দেখিয়ে বাতিল করা হয় উম্মে কুলছুমের নির্বাচনে অংশগ্রহনের সুযোগ। যদিও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে নিদ্রিষ্ট সময়ে মনোনয়নপত্র জমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন অভিভাবক সদস্যপ্রার্থী আবদুল হান্নানের সমর্থক মীর আবদুর রশিদ।
ভোটার তালিকায় অসংগতি, ইচ্ছাকৃত ভাবে সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক প্রার্থীকে বাতিল করে পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতি বানানোর পাঁয়তারা করার বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করলে তিনি এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই প্রার্থী।
কোন অভিযোগই আমলে না নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সকল আয়োজনের মধ্যদিয়ে সোমবার সকালে ভোট গ্রহন কার্যক্রম শুরু হলেও ওইদিনই মোকদ্দমা চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী কার্যক্রম অস্থায়ী ভাবে স্থগিতের নির্দেশ দেন আদালত। এতে বন্ধ হয় নির্বাচন।
মীর আবদুর রশিদ জানান, মনোনয়নপত্র জমা দিতে অভিভাবক সদস্যপ্রার্থী আবদুল হান্নান ভাইয়ের সঙ্গে আমি যখন প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করলাম, তখন দেখলাম উম্মে কুলছুমও তার মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন। এবিষয়টি আমি শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। নিশ্চয় কোন রহস্য রয়েছে, যে কারণে উনি নির্বাচনের অংশগ্রহনের সুযোগ পাননি।
ভোটার তালিকায় অসংগতির বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকবাল বাহার। উম্মে কুলছুম বলেন, যথাসময়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গেলেও তা জমা নেননি বাহার স্যার। ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় আদালতের শরনাপন্ন হয়েছি।
এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঝিল্লুর রহমান আনম জানান, আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ হয়েছে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। কিন্তু যেসকল অভিযোগ আমার কাছে আসছিল, সেই সকল অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন স্থগিত করার এখতিয়ার আমার নেই।

