অন্যান্য

আমনের ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় ধানের জমি ফেটে চৌচিরঃ; বিপাকে পড়েছেন চাষিরা

রবিউল হক বাবুঃ উওর ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলাধীন কৃষি ফসলের নির্ভর কৃষকেরা ধানের মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় ধানের জমি ফেটে চৌচির বিপাকে পড়েছেন গ্রামীণ চাষিরা।

বৃষ্টি নির্ভর আমনে ভরা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা নেই। অনাবৃষ্টিতে আমন ধানের জমি ফেটে চৌচির। কিছু কিছু কৃষক গভীর নলকূপ চালু করে ফসল বাচাঁনোর প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমন ধান লাগানোর সময় প্রায় পেরিয়ে গেলেও বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।

অন্যদিকে বৃষ্টির অভাবে মৌসুমি সবজি ক্ষেতে সেচ দেওয়া নিয়েও চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার হাত। বৃষ্টিশূন্য আবহাওয়ায় রোদের তাপে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না কেউ। তীব্র তাপে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। খাঁ খাঁ করছে অন্যান্য সবজির ক্ষেত। বিদ্যুৎ খরচে সেচ দিতে গিয়ে চাষিদের কপালেও পড়েছে চিন্তার ভাজ।

সরেজমিনে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে চাষিরা বলছেন, আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় আষাঢ় মাস থেকে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত। এবার মৌসুমের শুরু থেকেই স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা না যাওয়ায় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ক্ষেতে সেচ দিতে কৃষকের বাড়তি খরচ হবে। এ ছাড়া ক্ষেতে আগাছা, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেড়ে গেলে ফলন কমার বিষয়টিও কৃষকের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

গ্রামের আহাদ আহমেদ বলেন, পানির অভাবে হাল চাষ তো দূরের কথা জমিতে ফাটল ধরেছে। এখন গভীর নলকূপের পানি দিয়ে জমি তৈরি করে আমন রোপণ করা ছাড়া আর কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছি না। এদিকে বিদ্যুৎ থাকে না, মটর চালিত কৃষক কৃষি খামারের পানি দিতেও অসুবিধে আছি আমরা । দিন নাই রাত নাই ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যুৎ আসলেও থাকে মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘন্টা। এভাবে কৃষি খামারের জমির নির্ভরশীল কৃষকেরা বিদ্যুৎতে দিকে চেয়েও বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে না।

এছাড়াও সরেজমিনে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জানতে গিয়ে গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, বৃষ্টির অভাবে ক্ষরায় মাঠ পুড়ে চৌচির হয়ে গেছে। জমিতে হাল দেওয়া যাচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে বৃষ্টি হলে এত দিন আমন বুননের জমি তৈরি হয়ে যেত। বৃষ্টি না হওয়াতে সময়মতো ধানের চাড়া রোপণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্য দিকে ইটের ভাঁটা অহরহ গ্রাম বাংলায় গড়ে উঠেছে ফলে, ফসলের নির্ভর কৃষক কৃষি খামারের ফসল ফলিয়ে সুবিধা জনক নয়। ইটের কলকারখানা কালো ধোঁয়া জমিতে ফসলের জমি উর্বরতা ক্ষতি কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

গ্রামীণ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, নারিকেল গাছের নারিকেল আগের মতো নেই, বর্তমানে নারিকেলে কলি গাছে কম ধরছে, সুপারি গাছে সুপাড়ি কম ধরছে, আলোর সময়ে আলো পচনধরা, আম গাছে আম পচন , আমের বিচি ফেটে চৌচির, লিচু বাগানে লিচু আগের মতো নেই, পুকুর পাড়ে পেঁপে বাগানে আগের মতো পেঁপে ধরছে না। দিন দিন ইদের ভাঁটা চতুর্দিকে হওয়ায় গাছ মরে যাওয়া থেকে ফসলের নির্ভর কৃষক কৃষি খামারের ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি কারণ মনে করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি কোনোটাই কৃষিতে কাম্য নয়৷ এতে কৃষকের ক্ষেতে আগাছা, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেড়ে গিয়ে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *