জাতীয়সাহিত্য ও দর্শন

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেটে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সমাবেশ

প্যালেস্টাইনের জনগণের প্রকৃত মুক্তির লক্ষ্যে সকল সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের স্বরূপ উন্মোচন করে শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে শ্রমিক-কৃষকের মৈত্রীর ভিত্তিতে নয়াঔপনিবেশিক দেশে গণতান্ত্রিক বিপ্লব ও সাম্রাজ্যবাদী দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পথে অগ্রসর হওয়ার বিকল্প নেই।

ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ১৫ সেপ্টেস্বর জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেটেও বিক্ষোভ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৫টায় সুরমা পয়েন্টে জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সরকার’র সভাপতিত্বে এবং অন্যতম নেতা রমজান আলী পটুর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া, শাহপরান থানা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ  শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি খোকন আহমদ, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মহিদুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক রাশেদ আহমদ ভূইয়া, চন্ডীপুল আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনু মিয়া (সাগর), মীরের চক শ্রমজীবী সংঘের আহবায়ক আলী আহমদসহ প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘ বর্বর এ হামলায় নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য, প্রতিদ্বন্ধিতা এবং এ অঞ্চলকে নিয়ে একদিকে মার্কিনের নেতৃত্বে তার মিত্ররা অপরদিকে রাশিয়ার-চীনের আগ্রাসী যুদ্ধে সম্পৃক্ততা করার ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো মধ্যপ্রাচ্য, আরব বিশ্বসহ বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি ও জনগণের করণীয়। একইসাথে প্যালেস্টাইনের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের পক্ষে দাঁড়াতে হবে বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি, জনগণ ও সকল সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তিকে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন বাংলাদেশ আজ গভীর সামগ্রিক সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংকট তীব্র হয়ে গভীর থেকে গভীর হয়ে জটিলতা ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ভূরাজনীতি ও রণনীতিতে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্ধের কারণে মার্কিনের ইন্দোপ্যাসিফিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় মালাক্কা প্রণালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরীয় গুরুত্বপূর্ণ দেশ বাংলাদেশের উপর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ভাবে নিয়ন্ত্রণকে আরো জোরদার ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার এই পট পরিবর্তন করা হয়। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব হল প্রভুর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। এই যখন দেশের পরিস্থিতি তখন প্রচলিত সাম্রাজ্যবাদের দালাল রাজনৈতিক দল ও পেটিবুর্জোয়া তথাকথিত বাম সুবিধাবাদী রাজনৈতিক শক্তিসমূহ দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও প্রভুর পরিকল্পনাকে আড়াল করে কথিত নির্বাচনে স্ব-স্ব ফায়দা লোটার জন্য নানামুখী তৎপরতায় লিপ্ত।

দেশের এই সামগ্রিক পরিস্থিতিতে এক সাম্রাজ্যবাদের বদলে আরেক সাম্রাজ্যবাদ নয়, এক দালালের পরিবর্তে আরেক দালালকে নয়। বিদ্যমান নয়া উপনিবেশিক আধা সামন্তবাদী স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের লক্ষ্যে শ্রমিক-কৃষক, জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের পথে অগ্রসর হওয়ার পাশাপাশি সাম্রাজ্যবাদ অন্যায় যুদ্ধে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম অগ্রসর করুন।

সভা থেকে বাংলাদেশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ আগ্রাসীযুদ্ধ পরিকল্পনার সাথে সম্পর্কিত করতে জাতিসংঘের ব্যানারে মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টইেনার টার্মিনাল ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ইজারা দেওয়ার তৎপরতা, মার্কিন-বাংলাদেশের যৌথ সামরিক মহড়াসহ ইতাদি তৎপরতার সাথে সম্পৃক্ত করার অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সকল সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তি ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।  প্রেস বিজ্ঞপ্তি