সরকারি দুইটি সংস্থার দ্বন্দ্বে নান্দাইলে কিছু অংশে সড়ক ফাঁকা রেখেই ইট বিছানোর কাজ সমাপ্ত
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ- ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় একটি কাঁচা রাস্তায় একই সাথে সরকারি দুইটি সংস্থা ইট বিছানোর কাজ করেছে। কিন্তু আমার নয় তার নয় এমন ঠেলাঠেলি করে রাস্তার মাঝখানে কিছু অংশে ইট বিছানো হয়নি। ফলে জায়গাটি গর্তসহ খালি পড়ে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তবে কেউ কেউ আবার তা নিয়ে কৌতুক করতেও ছাড়ছেন না। তারা রসিকতা করে বলছেন ফেলে রাখা অংশটুকু করে দেবার দায়িত্ব যখন কারোর নয় তাহলে সে দায়িত্ব এখন পাবলিকের।
নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউপি’র কুলধূরুয়া গ্রামে দীর্ঘদিনের পুরোনো একটি কাচা রাস্তা রয়েছে। নান্দাইল-আঠারোবাড়ি পাকা সড়কের দুলালের দোকান থেকে রাস্তাটি স্থানীয় ওহাব ভূইয়ার বাড়ি সামনে দিয়ে ব্যাপারী বাড়ি হয়ে বাশহাটী বাজারের কাছে নান্দাইল চৌরাস্তা-কেন্দুয়া পাকা সড়কের সাথে মিশেছে।রাস্তার শুরুতে দুই কিমি মধ্যেই কুলধূরুয়া এবং খামারগাঁও নামে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। আশপাশের ছয়টি গ্রামের লোকজন এ রাস্তাটি ব্যবহার করে নান্দাইল সদর,আঠারোবাড়ি, রায়বাজার এবং বাশহাটী বাজারে চলাচল করেন।বাশহাটী বাজারে অবস্থিত দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দিন রাত এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা রাস্তাটি পাকাকরনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
প্রায় এক মাস পূর্বে শুরু দুলালের দোকান থেকে সাধনের বাড়ি পার হয়ে ১২’শ মিটার রাস্তা দুই ভাগে ইট বিছানোর কাজ করা হয়। প্রথমে ৩৮ মিটার অংশের কাজ এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়ন করে নান্দাইল উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কাজটি পান আতাহার আলী নামে স্থানীয় একজন ঠিকাদার। বাকি ১০০০ মিটার ইট বিছানোর কাজটি স্থানীয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে করা হয়। কাজের ঠিকাদারের দায়িত্বে ছিলেন আরেকজন স্থানীয় ঠিকাদার সারোয়ার জাহান জণি। প্রায় একই সাথে কাজ আরাম্ভ করে শেষ করলেও দুজনের কাজের মাঝেখানে আশু মিয়ার বাড়ির সামনে রাস্তায় প্রায় ৯ ফুট জায়গায় ইট বিছানোর কাজ বাকি পড়ে রয়েছে। বর্তমানে গর্ত করে রাখা রাস্তাটির ওই অংশে কাদা পানি জমে পথচারীদের দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট ছোট যানবাহনও ওই অংশটি দিয়ে চলাচল করতে পারছেনা।
ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় জাহাঙ্গীর ও শাহজাহান মিয়া জানান, ১ম অংশে যে ঠিকাদার কাজ করেছেন তিনি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর দেখিয়ে দেওয়া মাপের চেয়েও কিছুটা বেশি করেছেন। কিন্তু পরের অংশের ঠিকাদার রাস্তায় গর্ত করলেও তাতে ইট না বিছিয়ে বাকি অংশে বিছিয়েছেন। তারা বারবার বলার পরও শ্রমিকরা জায়গাটুকু ফাঁকা রেখেছে। স্থানীয় সিরাজ মিয়াসহ অন্যরা জানান,কাজটি শেষ করার জন্য বারবার বলার পরও উভয় ঠিকাদার এর দায়িত্ব এক অপরের উপর চাপিয়েছেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাহলে ওই অংশটির কাজ করার দায়িত্ব কি আমাদের মত পাবলিকের !
ঠিকাদার আতাহার আলী জানান,তাঁকে যতটুকু অংশ চিহিৃত করে দেওয়া হয়েছে তার চেয়েও এক মিটার বেশি কাজ করে দিয়েছেন।
দ্বিতীয় অংশের ঠিকাদার সারোয়ার হোসেন জনি জানান, তিনি যেখান থেকে কাজ শুরু করার কথা সেখান থেকে শুরু করে আগে কাজ শেষ করেছেন। পরে কি হয়েছে সেটার তার দেখার বিষয় নয়।
যোগাযোগ করলে নান্দাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসানউল্লাহ জানান, কিছুটা ভুল বুঝাবুঝির কারণে ওই অংশটি ফাঁকা পড়ে আছে।অচিরেই অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সেটি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
নান্দাইল উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান,এটা তার কাজ নয়,তার যতটুকু(৩৭ মিটার) করার কথা ততটুকু করা হয়েছে। ওই অংশটুকু কেন বাকি রয়ে গেছে সেটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলতে পারবেন, তার সাথে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন তিনি।