অনিয়ম-দূর্নীতিঅন্যান্যজাতীয়

নান্দাইলে প্রতিপক্ষের হাতে মার খেয়ে এক পরিবারের ৭ সদস্য গুরুতর আহত

নান্দাইল(ময়মনসিংহের)প্রতিনিধিঃ– ময়মনসিংহের নান্দাইলে জমিজমার সীমানা নির্ধারণ করা নিয়ে প্রতিপক্ষের মারধরের শিকার হন এক পরিবারের নারী, পুুরুষ ও বৃদ্ধসহ সাতজন। আবারও মারধরের হুমকি পেয়ে চিকিৎসা শেষে নিজবাড়িতে ফিরতে পারছেনা আহতরা।
আহত পরিবারটির বাড়ি নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের পাইকারগাতী গ্রামে। তাঁর বর্তমানে নিজ বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে দরিল্লা গ্রামের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দরিল্লা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আহত পরিবারের সদস্যরা একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। বাড়ির একটি ঘরে গিয়ে দেখা গেছে চিকিৎসা শেষে হাত-পা ব্যান্ডেজ নিয়ে ঘরে শুয়ে আছেন সাতজন। আহতরা হচ্ছেন বৃদ্ধ বাবা রুস্তম মিয়া (৬৮) ও তাঁর ছেলে সবুজ মিয়া (৪২)। সবুজ মিয়ার স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৩৫), অন্তঃস্বত্ত্বা মেয়ে বৃষ্টি আক্তার (২৩), পুত্র ফয়সল মিয়া (২২) ও সজীব মিয়া (২১) ও মেয়ে খাদিজা আক্তার (১৩)।
ডান পায়ে ব্যান্ডেজ বাধা সবুজ জানান, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাঁর পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি আক্তার জানান তিনি অন্তুঃস্বত্ত্বা হলেও তাঁকে ছাড় দেওয়া হয়নি। পেটে লাথি মারা হয়েছে। অন্য আহতরাও আবেগাপ্লুত হয়ে প্রতিপক্ষের নির্মমতার কথা তুলে ধরেন।
ওই পরিবারের কর্তা রুস্তম মিয়া জানান, তিনি ১০ শতক জমি নিজের ছেলের নামে লিখে দিয়েছিলেন। গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) ওই জমি মাপামাপি করার সময় তাঁর ভাই ওসমান, দুলাল মিয়া ও ওসমানের ছেলে রেনু মিয়াসহ কয়েকজন তাঁকে বাধা দেন। পরে তাঁকে সেখানে ফেলে মারধর করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে স্ত্রী নাসিমাসহ সন্তানরা ছুঁটে এলে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে তাঁদের আঘাত করা হয়। পরে গ্রামের লোকজন তাঁদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তাঁরা আর বাড়ি ফিরতে পারছেন না। রেনু মিয়া ও তাঁর লোকজন আবারও তাঁদেরকে মারধরের হুমকি দিয়েছেন। ফলে ভয়ে তাঁরা দরিল্লা গ্রামে আশ্রয় দিয়েছেন। রুস্তম মিয়া জানান, আহত অবস্থায় হাসপাতালে যাওয়ার পথে নান্দাইল মডেল থানার গেটের কাছে একজন পুলিশ কর্মকর্তার কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তা তাঁদের চিকিৎসা নিতে বললেও থানা থেকে কেউ তাঁদের খোঁজ নেয়নি।
মারধর করে গুরুতর আহত করা ও বাড়ি না ফিরতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে বাড়িতে গেলে ওসমান ও দুলাল মিয়াকে পাওয়া যায়নি। তবে ওসমানের পুত্র রেনু মিয়া দাবি করেন রুস্তম মিয়ার ছেলেরা বাড়িতে গাঁজার আসর বসায়। সেই জন্য  তাঁদেরকে শাসন করা হয়েছে। তবে শাসনটা একটু বেশি হয়ে গেছে।
গ্রামের মসজিদের ইমাম মোকাররম হোসাইন বলেন, রুস্তমের বাড়িতে গাঁজার আসার বসানোর তথ্যটি সঠিক নয়। প্রতিদিন তাঁর মসজিদে গ্রামের অনেক লোকজন নামাজ পড়তে আসেন। গাঁজার আসর বসানো নিয়ে রেনু মিয়ার অভিযোগ সত্য হলে কেউ না কেউ এ প্রসঙ্গটি নিয়ে মসজিদের আলোচনা করতেন। গ্রামের কয়েকজন নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রেনু মিয়া অযথা দরিদ্র পরিবারের নারী ও পুরুষ সদস্যদের মারধর করে নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছেন।
নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মোজাহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।