অন্যান্যজাতীয়

হালুয়াঘাটের এই আসমানীর খবর কেউ  নিল না

মোঃ বাবুল হোসেন:
“আসমানীরে দেখতে যদি
তোমরা সবে চাও,
রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি
রসুলপুরে যাও”
পল্লীকবির জসীমউদ্দীনের সেই কবিতার উক্তি আজও আমাদের অনেকের মনে আছে। ঠিক তেমনই আরেক আসমানীর খবর পাওয়া গেছে হালুয়াঘাট উপজেলার দক্ষিণ মনিকুড়া গ্রামে। তবে দুঃখিনী এই মহিলার নাম আসমানী না রাশিদা বয়স ৬৫। তার স্বামী আকিকুল ইসলাম হাঁপানী রোগে মৃত্যুবরণ করেন ২০২০ সালে। স্বামীর মৃত্যুর পর আরো অসহায় হয়ে পড়েন রাশিদা। উপায়ান্তর না দেখে নিজেই খাঁচাতে করে বাদাম,বুট ,চানাচুর,আচার নিয়ে সেন্ট মেরীস বালিকা বিদ্যালয়ের ভিতরে ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিক্রি করে সামান্য আয় করেন। সে আয় দিয়ে কোন রকমে জীবন পার করছিলেন। এর পর করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বিদ্যালয়ে যেতে বারণ করে কর্তৃপক্ষ। এ যেন আরেক মহাবিপদ। এ অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করতে থাকেন রাশিদা। আশেপাশের লোকজনে কিছু খাবার দিলেই মিলে আহার।
কোন কোন দিন না খেয়েও রাতে শুয়ে থাকতে হয়েছে তাকে। নিজের দুটি মেয়ে আছে তাদের বিয়েও হয়েছে। মেয়েদের সংসার জীবণে  অভাব অনটনের কারণে কোন সহযোগিতাই পায়নি মা রাশিদা।
সরকারি সহযোগিতার কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, অনেকেই আমাকে আশ্বাস দিয়েছে সরকারী ঘর দিবে,ঘরের জন্য  টিন দিবে,বিধবা কার্ডের চাল দিবে, বিধবা ভাতা দিবে এখন পর্যন্ত কোন সাহায্যই পেলাম না। আসলে আমার ভাগ্যটাই মন্দ। আমার নিজের জায়গা নাই রাস্তার পাশে এমন একটি ভাঙ্গা ঘরে থাকি যা আপনি দেখেছেন। নিরুপায় হয়ে এমন ঘরেই থাকতে হচ্ছে। এখন শীতকাল বৃষ্টির ভয় নাই কিন্তু আগামী বর্ষায় কিভাবে ঘরে থাকবো? আমার শরীরের অবস্থা ভাল না নানা অসুখ লেগেই আছে। খাবারই জোটেনা ঐষধ কিনি কি দিয়ে।
আক্ষেপ করে করুণ কন্ঠে  বলেন, আমার জন্য সরকারী কোন সাহায্য আমি দেখে মরে যেতে পারবো তো?