উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ, ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মাদ্রাসা এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কেন্দ্রে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ধারার উচ্চ শিক্ষার শিক্ষার্থী রয়েছেন। সামগ্রিকভাবে কর্তৃপক্ষের বিশেষত শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দুর্বলতা, সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থতা ও অনেক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ইতিমধ্যে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমে জটিল অবস্থা বিরাজ করছে। যা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কমবয়সী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হওয়ায় তা বিবেচনায় নিয়ে সরকার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালুর বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে করোনা পরিস্থিতি ৫ শতাঙশের নিচে না আসা পর্যন্ত চালু সম্ভব নয় বলে ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন। অথচ সবদিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রমের বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন। কারণ আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অধিকাংশ নিম্ববিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্ত্বান। পারিবারিক আয়-রোজগারের সাথে তাদের শিক্ষা গ্রহণ সম্পর্কিত । যেহেতু এসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে, সেহেতু তাদের উপর পরিবারের হাল ধরার চাপ রয়েছে। দেরী হওয়ার ফলে আর্থিক কারণে অনেক শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রমের শেষ দিকে এসে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার উপক্রম তৈরি হচ্ছে। একই সাথে তাদের সার্টিফিকেট বয়স বাড়ার কারণে চাকুরির ক্ষেত্রে বয়সজনিত জটিলতায় পড়ার আশঙকা তৈরি হচ্ছে।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সচেতর প্রহরীর ভূমিকা পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার প্রাণস্বরুপ। দেশের যে কোন সঙকট-সমস্যায় জনগণের বিবেক হিসেবে তারা ভূমিকা রাখতে পারেন। এমনকি করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন অসংগতির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গঠণমূলক সমালোচনার মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর শিক্ষিত, সচেতন অংশ হিসেবে তারা বিভিন্ন সঙকট-সমস্যায় দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দিতে পারেন। বিশেষত শিক্ষার্থীরা করোনা পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করে করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য কর্মিদের সাথে সহযোগী ভূমিকা পালন করতে পারেন।
উচ্চ শিক্ষার কার্যক্রম চালুর বিষয়ে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তুলনামূলকভাবে অধিকতর সচেতনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। আধূনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য ক্ষেত্রেও কিভাবে সহজ উপায়ে স্বাস্থ্য বিধি রক্ষা করে সচল রাখা যায় সে বিষয়ে তারা সৃজনশীল ভূমিকা রাখতে পারেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি খুলে দিয়ে উচ্চ শিক্ষার কার্যক্রমের প্রেক্ষিত সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন।