হোসেনপুরের মাঠে ঘাটে কৃষান কৃষাণীর ব্যস্ততা ধান মাড়াইয়ে
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে সকালের সোনারোদ। শেষ হেমন্তের মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা সোনালী ধান। লেজঝোলা ফিঙে আর শালিক ঝগড়া করে উড়ে যায়। এসব কিছুই দেখার ফুরসত নেই যেন কৃষকের, মাঠের পাকা ধান কেটে তুলতে হবে গোলায়।
রবিবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়,ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের কৃষকেরা। এখন চলছে মাঠে মাঠে ধান কাটার উৎসব। নবান্নের আমেজে চলবে পিঠা-পুলির উৎসব। আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা বেজায় খুশি। শিশিরের ভারে হেলে পড়েছে ধান। ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পান্তা খেয়ে কাস্তে হাতে কৃষক মাঠে ছোটেন সেই ধান কাটতে। ধানের পাঁজা মাথায় নিয়ে কৃষক যখন আইল পথে পায়ের ছাপ এঁকে হেঁটে যান তখন যেন মনে হয় সূর্যের আলোয় কৃষকের মাথায় স্বর্ণ দানা চিকচিক করছে।
হেমন্তের বাতাসে ভেসে বেড়ায় পাকা ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ। দিনভর কয়লা খাটুনি খেটে ধান কাটার পর মাড়াই শেষে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছেন কৃষানি বধূরাও।
গত বছর এ উপজেলার আমন মৌসুমে মাজরা পোকার আক্রমণে ফলন্ত ধান গাছগুলো মরা ও সাদাবর্ণ ধারণ করা শুরু করেছিল পরে অনেক কৃষক দ্রুত ঔষধ দিয়ে এবং স্থানীয় কৃষি অফিস তদারকি বাড়িয়ে দিয়ে কৃষকদের বড় ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা করে।কিন্তু এ বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ও কৃষি অফিসের যথারীতি তদারকির ফলে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সাহেবের চর গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, এবার ফলন ভালো হয়েছে তবে এ বছর ধান গাছের গোড়া পছন রোগ নিয়ে অনেকটা হতাশায় ছিলাম পরে যথাপোযুক্ত পরিচর্যায় ঝুঁকিমক্ত হই,কিন্তু তারা আফসোস করে আরও বলেন আমাদের এলাকায় নিযুক্ত কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তার পরামর্শ সঠিক মূহুর্তে পেলে হয়তো ফসল নিয়ে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারতাম।কৃষি উপ -সহকারী পদের নামই শুনেছি কিন্তু চোখে দেখিনি।
উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের কৃষক মহসিন, খলিল মিয়া, চরকাটিহারী গ্রামের কৃষক বাতেন মিয়া, বিশ্বনাথ পুরের মো. জাকিরসহ অনেকে জানান, যথাসময়ে সার, বালাইনাশক ও সেচ দিতে পারায় ভালো ফলন হয়েছে, তবে চাষাবাদ সংশ্লিষ্ট দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ব্যাপক চাপে ফেলেছে কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একেএম শাহজাহান কবির জানান, এ বছর উপজেলায় ৮ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে।

