জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও গণবিমুখী বাজেট প্রত্যাখ্যান করে ময়মনসিংহে এনডিএফ এর প্রতিবাদ

গতকাল ৩ জুন ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার। জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও গণবিমুখী এ বাজেট প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৪ জুন সকালে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট(এনডিএফ) ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মাহতাব হোসেন আরজু’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সভাপতি এডভোকেট হারুন-অর-রশিদ, সহ-সভাপতি হযরত আলী, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির জেলা সভাপতি শাহজাহান মিয়া, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদের জেলা সভাপতি বি.সরকার এবং নারী নেত্রী মির্জা আরাফাত জাহান নাজনীন।

প্রতিবাদ সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি ৷ এর মধ্যে উন্নয়ন ব্যয়ের আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকার, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩০ হাজার কোটি বেশি ৷ আসছে অর্থবছরে সরকারের মোট ব্যয়ের অর্ধেকের বেশি প্রায় ৩ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকাই খরচ হবে সরকারের পরিচালন ব্যয়ে ৷ প্রায় সাড়ে ১১ শতাংশ যাবে সুদ মেটাতে যার আকার ৭০ হাজার কোটি টাকা ৷ এছাড়া খাতভিত্তিক ব্যয় হিসাবে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে জনপ্রশাসন ৷ ৬৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকাই যাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে ৷ ১৫ দশমিক সাত শতাংশ অর্থ খরচ হবে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৷ পরিবহণ ও যোগাযোগে ব্যয় হবে প্রায় ১২ শতাংশ ৷ এছাড়া স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে সাত শতাংশ, প্রতিরক্ষায় ছয় দশমিক দুই শতাংশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণে পাঁচ দশমিক সাত শতাংশ, স্বাস্থ্যে পাঁচ দশমিক চার শতাংশ, কৃষিতে পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হবে ৷ অন্যদিকে বৈদেশিক অনুদান মিলিয়ে বাজেটে আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার । এর মধ্যে রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা ৷

বাজেটের উল্লেখিত চিত্র উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বেশি বরাদ্দ দেয়ার ঘোষণা দিলেও ঘোষিত বাজেটে তা প্রায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। আর দেশের সবচেয়ে বেশি জনগোষ্ঠী যে খাতে নিয়োজিত সেই কৃষিখাতে বাজেটের ব্যয় ধরা হয়েছে আরো কম। অথচ দেশের আমলাদের জন্য ধরা হয়েছে সবচেয়ে বেশি ব্যয়। অন্যদিকে বাজেট আয়ের ক্ষেত্রে মূলত: ধরা হয়েছে রাজস্ব খাতকে। যা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জনগণকে বহন করতে হবে। এতে জনগণের উপর চাপানো হয়েছে করের বোঝা। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী লগ্নি পুঁজির স্বার্থে করপোরেট কর কমানো হয়েছে। এতে স্পষ্ট যে, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী এ বাজেট দেশের জনগণের উপর শোষণ-নিপীড়ন আরো তীব্র করবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি করবে, কিন্তু জনগণের দ্রব্যমূল্যের ক্রয়-ক্ষমতা কমিয়ে ফেলবে। ফলে উল্লেখিত বাজেট গণবিধ্বংসী বৈকি আর কিছু নয় বলে নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ সভায় বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *