নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আগামীকাল ভালুকা মুক্ত দিবস উদযাপিত হবে

আফরোজা আক্তার জবা ভালুকা প্রতিনিধিঃ দক্ষিণ ময়মনসিংহে গঠিত অনিয়মিত আফসার বাহিনীর ত্রিমুখী আক্রমনে তৎকালীন ভালুকা থানা সদর পাক ও রাজাকার মুক্ত হওয়ায় আগামীকাল ৮ ডিসেম্বর এই দিনটিকে ভালুকা মুক্ত দিবস হিসাবে উদযাপন করা হবে। ১৯৭১ সনের ৭ ডিসেম্বর দিবাগত মধ্য রাতে আফসার বাহিনীর কোম্পানি কোমান্ডার চাঁন মিয়া, কোম্পানি কোমান্ডার খোরশেদ আলম, কোম্পানি কোমান্ডার কছিম উদ্দিন, কোম্পানি কমান্ডার বছির উদ্দিন ও কোম্পানি কোমান্ডার এম এ হাকিমের নেতৃত্বে ৫ কোম্পানি মুক্তি সেনা ৩ দিক থেকে এক যোগে ভালুকা থানা সদরে পাক ও রাজাকার বাহিনীর ক্যাম্পের উপর সারাসী আক্রমন শুরু করে।আক্রমনের ফলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পাক বাহিনী ও প্রায় ৮ শতাধিক রাজাকার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গফরগাঁওয়ের উদ্দেশ্য ভালুকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় কোম্পানি কোমান্ডার ফয়েজ আহম্মেদ ও কোম্পানি কোমান্ডার এমদাদুল হক দুলুর নেতৃত্বে ২ কোম্পানি মুক্তি সেনা তাদেরকে ধাওয়া করে গফরগাঁয়ে নিয়ে যায়।

ফলে ৮ ডিসেম্বর সকালে মুক্তি সেনা ও মুক্তিগামী জনতা সেসময় লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ভালুকায় থানা সদরে প্রবেশ করে। এ সময় ভালুকা থানা চত্বরে আনুষ্ঠানিক ভাবে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। দিবসটি উদযাপনে ভালুকায় উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যৌথ কর্মসূচি গ্রহন করেছে। গৃহিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল সকালে স্থানীয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সৌধে পুস্পমাল্য অর্পণ, র‌্যালি আফসার বাহিনীর অধিনায়ক মেজর আফসার উদ্দিন আহম্মেদ ও মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক এম পি মোস্তফা এম এ মতিন এডভোকেট এর মাজার জিয়ারত, মুক্তিযোদ্ধা জনতার বিজয় র‌্যালী, উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর মুক্ত মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এ দিকে ৯/৭১ তারিখ সকালে কোম্পানি কমান্ডার ফয়েজ আহম্মেদ ও এমদাদুল হক দুলু গফরগাঁও সদরে ভালুকা থেকে পালিয়ে আসা রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের আত্মসমর্পনে বাধ্য করে। একই দিন সকালে কোম্পানি কোমান্ডার আনসার উদ্দিন মাষ্টার, কোম্পানি কমান্ডার আয়োব আলী, কোম্পানি কমান্ডার আঃ করিম পাঠান ও কোম্পানি কমান্ডার ফজলুল আমীনের নেতৃত্বে ৪ কোম্পানি মুক্তি সেনা ৪ দিক থেকে ত্রিশাল থানা সদর আক্রমন শুরু করলে এক পর্যায়ে অর্ধ শতাধিক রাজাকার সদস্য আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। ফলে ৯, ডিসেম্বর ১৯৭১ ত্রিশাল ও গফরগাঁও থানা সদর পাক ও রাজাকার মুক্ত হয়। প্রকাশ ১৯৭১ সনে তৎকালীন স্বাধীন বাংলা সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য দেশটিকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করে।

এ ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে থেকে তৎকালিন স্বাধীন বাংলা সরকার ও ভারত সরকারের কোন প্রকার সাহায্য সহযোগীতা ছাড়াই যে চারটি অনিয়মিত বাহিনী গড়ে উঠে তাদের মধ্যে ময়মনসিংহের আফসার বাহিনী অন্যতম। ১৯৭২ সনে তৎকালীন উপ রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ময়মনসিংহ মহিলা ক্যাডেট কলেজে (তৎকালীন রাবেয়া বালিকা স্কুল) আফসার বাহিনীর সকল মুক্তি সেনারা অস্ত্র জমা দিলে আফসার বাহিনীকে এফ, জে-১১ সাব সেক্টর হিসাবে ঘোষনা করে প্রশংসা পত্র প্রদান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *