যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে “ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস”

শহর প্রতিনিধি ঃ আজ ১০ ডিসেম্বর, ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন ময়মনসিংহ জেলাকে। সেই স্মৃতি আজও অম্লান ইতিহাসের পাতায়। দেশ স্বাধীন করার দৃঢ় প্রত্যয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়া ১১ নম্বর সেক্টরের এফজে মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনী যৌথভাবে ময়মনসিংহ অঞ্চলে অবস্থানরত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর সম্মিলিত যুদ্ধের পরিকল্পনা করে।

আর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঐ দিনই ক্যাপ্টেন বালজিৎ সিংয়ের অধীনে মুক্তিবাহিনীর বেশ কয়েকটি কোম্পানি জেলার সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট দিয়ে যুদ্ধ শুরু করে। সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর একের পর এক আক্রমণের পাশাপাশি আকাশপথে যুদ্ধের মাধ্যমে শত্রুপক্ষকে পিছু হটতে বাধ্য করে।

৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পর্যায়ক্রমে ফুলপুর, তারাকান্দা, শম্ভুগঞ্জ ও ময়মনসিংহ শহর ছেড়ে টাঙ্গাইল জেলার ভেতর দিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যেতে শুরু করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১০ ডিসেম্বর ভোর রাতের মধ্যে তাদের সর্বস্ব নিয়ে ময়মনসিংহ শহর থেকে পালিয়ে যায়। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিকামী শহরবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। সর্বস্তরের জনতা মুক্তির আনন্দ মিছিল নিয়ে একযোগে স্থানীয় সার্কিট হাউজ মাঠে জড়ো হতে থাকেন। সেখানেই ওড়ানো হয় বাংলাদেশের জাতীয় লাল-সবুজ পতাকা।

বিশেষ দিনটিকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহ জুড়ে দিনব্যাপী বিবিধ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসন, ময়মনসিংহ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ময়মনসিংহের আয়োজনে পতাকা উত্তোলন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জনতার ‘বিজয় র‍্যালী’র আয়োজন করা হয়। বিজয় র‍্যালীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা পিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম,সহ সভাপতি এড আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং জাতির সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও তাঁদের সন্তানগণ।

সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানে রয়েছে আলোচনা সভা,মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *