শঙ্কার চেয়েও বেশি সংকুচিত জাপানের অর্থনীতি

বণিক বার্তা ডেস্ক থেকে: করোনাভাইরাস মহামারীতে বেশ নাজেহাল অবস্থায় রয়েছে জাপানের অর্থনীতি। সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ জোরেশোরে কাজ করছে দেশটি। ব্যাপ্তি বাড়ানো হচ্ছে টিকাদান কার্যক্রমেরও। তবে কোনো কিছুতেই যেন অর্থনীতির মন্দা ভাব ঠেকানো যাচ্ছে না। মহামারীর ধাক্কায় দেশটির অর্থনীতিতে সংকোচনের আশঙ্কা এমনিতেই ছিল। তবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) সেই শঙ্কার চেয়েও বেশি সংকুচিত হয়েছে দেশটির অর্থনীতি, যা আরো নিম্নমুখী হতে পারে। দ্বিগুণ হতে পারে অর্থনৈতিক অবনমন।

মহামারীর ধাক্কায় জাপানে বিনিয়োগ কমে আসছে। নাগরিকরা দৈনন্দিন খরচ কমিয়ে দিচ্ছে। রুগ্ণ দশা দেশটির পর্যটন খাতেও। ফলে টান পড়েছে সরকারি কোষাগারেও। সব মিলিয়ে কভিড-সৃষ্ট সংকটে জানুয়ারি-মার্চ সময়কালে দেশটির জিডিপি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ফলে চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) দুই অংকের প্রবৃদ্ধির যে প্রত্যাশা করা হচ্ছিল, সেটি আপাতত আর হচ্ছে না করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমাতে কঠোরভাবে কাজ করছে প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগার প্রশাসন। জোর দিচ্ছে অর্থনৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে। তবে কোনো কিছুই যেন কাজে আসছে না। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে অর্থনীতির সেই শোচনীয় চিত্রই উঠে এসেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।সংক্রমণ ঠেকাতে জাপানের জরুরি অবস্থা যদি আরো বিস্তার ঘটে, সেটি সংকোচনের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন ডাই-ইসহি লাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক ইয়োশিকি শিনকে। এ অর্থনীতিবিদের মতে, জাপানের অর্থনীতির বড় একটি অংশজুড়েই রয়েছে ভোক্তাব্যয়, যা এখন আশঙ্কাজনকভাবে কমে এসেছে।

এদিকে দেশটিতে চলমান রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থার আওতায় এসেছে আরো তিনটি রাজ্য। গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা এ তিনটি রাজ্যকে জরুরি অবস্থার আওতায় আনেন। ফলে দেশটির অর্থনীতিতে গতি আনার প্রায় অর্ধেক কার্যক্রম বিধিনিষেধের কবলে পড়েছে। তবে এটি ঠিক যে এ বিধিনিষেধ এখনো ইউরোপের তুলনায় কিছুটা নমনীয় অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু দেশটির বড় বড় শহরের রেস্টুরেন্ট ও বারগুলোকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে সংক্রমণ ঠেকাতে জারি করা বিধিনিষেধের সমাপ্তি টানার সময় ছিল গত মে মাসের শেষের দিকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় যা করতে পারেনি জাপান সরকার। বিপরীতে অর্থনীতিতে অবনমন ঠেকানোও সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে বেশ চাপে পড়েছে ইয়োশিহিদে সুগা। এ অবস্থায় অর্থনীতির গতি ফেরাতে বাড়তি পদক্ষেপ নিতে হবে তাকে। কারণ আগামী সাধারণ নির্বাচনে নিজের প্রধানমন্ত্রীর পদ ধরে রাখতে চান তিনি। আর সেটি নির্ভর করছে অর্থনীতির গতিবিধির ওপরই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *