সুলতানা রাজিয়া’র মৃত্যুবার্ষিকীতে নারীর সম অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রেণীহীন সমাজ গড়ার আহবান

স্টাফ রিপোর্টার:   গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির আহবায়ক এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তোলার একনিষ্ট কর্মি সুলতানা রাজিয়ার ১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে নারীর সম অধিকার প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। নারীর সম অধিকার প্রতিষ্ঠায় নেতৃবৃন্দ শোষণহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহবান জানান। ২৭ আগস্ট-২০২১ সুলতানা রাজিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীর এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ আহবান জানানো হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানের পূর্বে দুপুর ১২ ঘটিকায় গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী গ্রামে অবস্থিত  সুলতানা রাজিয়া’র সমাধিতে পুস্পার্পণ করা হয়। এ সময় গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি ও ময়মনসিংহ জেলা কমিটি, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের জেলা কমিটি এবং ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়।  পুস্পার্পণ শেষে প্রয়াতের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট শোক নিরবতা ও শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়। শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি শ্যামল ভৌমিক।

শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছেন শ্যামল ভৌমিক

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি শ্যামল ভৌমিক, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির  অন্যতম কেন্দ্রীয় নেতা রহিমা জামাল, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের ময়মনসিংহ জেলার সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন,  বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের  জেলা দপ্তর সম্পাদক বাবলী আকন্দ ও জাতীয় ছাত্রদলের ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানসূরা আজাদ রুপালী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আহবায়ক জিনাত রেহেনা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সুলতানা রাজিয়া মটর নিউরণ রোগে ভুগে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থেকে গত বছর ৬০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৬১ সালের ১ জুন ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার বাশিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাশিয়া হাইস্কুল থেকে ১৯৭৬ সালে মাধ্যমিক পাস এবং ১৯৭৯ সালে ময়মনসিংহ থেকে পিটিআই পাশ করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৭১ সালে উগ্র-বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী শ্লোগানে  দেশীয় মুৎসুদ্দি পুঁজি ও সাম্রাজ্যবাদী লগ্নি পুঁজির স্বার্থে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সরকার-সংবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত থাকে। এ প্রেক্ষাপটে গফরগাঁও ও কাওরাঈদ অঞ্চলে বিপ্লবী রাজনীতির বিকাশ ঘটতে থাকে। বিপ্লবী রাজনীতিকে দমন করতে তৎকালীন শেখ মুজিব সরকার রক্ষিবাহিনী দিয়ে প্রগতিশীল ও বিপ্লবী রাজনীতিক নেতা-কর্মিদের হত্যা, নির্যাতন অব্যাহত রাখে। এর ধারাবাহিকতায় কাওরাঈদ এলাকার বিপ্লবী নেতা আব্দুল মান্নানকে রক্ষি বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে।

নেতৃবৃন্দ বলেন,  ১৯৮০ সালে সুলতানা রাজিয়া  এ্কই এলাকার নিগুয়ারী গ্রামের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা সাজ্জাদ হোসাইন (সুলতান) কে বিয়ে করেন। তখন থেকে তিনি আমৃত্যু শ্রমিক-কৃষক-জনগণের পক্ষে পারিবারিক জীবনের অনেক ব্যস্ততার মাঝেও সংগঠন-সংগ্রাম গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্ঠা করেন।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নারী অধিকার বা নারী মুক্তি সমাজ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ছাড়া সম্ভব নয়। সমাজে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও  শ্রেণী বিভক্তির কারণে নারী অধিকার খর্ব করা হয় । পরবর্তীতে সভ্যতার বিকাশের ধারাবাহিকতায় শিল্প বিপ্লবের বিকাশের প্রক্রিয়ায় শ্রমিক শ্রেণীর রাজনৈতিক মঞ্চে আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে নারী মুক্তির আন্দোলন সামনে আসে। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণীর একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠার প্রকৃত নারী মুক্তির চিত্র পরিলক্ষিত হয়।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *