হোটেল সেক্টরের সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার:  হোটেল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও শ্রম আইন বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সভা গত ৮ জুলাই রাত ৯ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়। সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল খালেক এর সভাপতিত্বে ও ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এর সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল যোগাযোগ মাধ্যমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হোটেল সেক্টরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকেন। সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রজত বিশ^াস এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স-এমপ্লয়ীজ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আহসান হাবিব বুলবুল।
সম্প্রতি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ডেল্টা) দ্রুত বিস্তৃতি ঘটায় দেশে ব্যাপকহারে সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধি পাচ্ছে। সভার শুরুতে করোনা মহামারীতে ব্যাপক মানুষের প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং শোক সন্তোপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন নেতৃবৃন্দ।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ গ্রাম ও শহরে সমানভাবে বিস্তৃতি ঘটিয়েছে। সে প্রেক্ষিতে সরকার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে শহরাঞ্চলে শুধু লকডাউন কার্যকর করছে। কিন্তু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ ও মোকাবেলার জন্য ভ্যাকসিন, খাদ্য, স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে নি। বরঞ্চ এই দুর্যোগ ও কর্মহীন সময়ে লকডাউন অমান্য করার দায়ে দেশের অসহায় গরীব-শ্রমজীবি মানষদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা অর্থদন্ড আদায় করছে সরকার। সভায় এ বিষয়ে নেতৃবৃন্দ গভীর ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতির চলমান মন্দা এবং করোনা মহামারীর কারণে ব্যক্তি মালিকানায় নিয়ন্ত্রিত হোটেল পর্যটন শিল্পেও সংকট তীব্রতর হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে এ সেক্টরে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় দেশীয় ছোট-মাঝারী প্রতিষ্ঠানসমূহের দেওলিয়াত্ব ঘটে বিদেশী লগ্নিপুঁজি এবং দেশীল দালাল পুঁজির বিনিয়োগ হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে। ফলে হোটেল সেক্টরে শোষণ-নির্যাতন তীব্রতর হওয়াসহ ছাঁটাই-চাকুরিচ্যুতি বৃদ্ধির আশংকাও তৈরি হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে সৎ, সংগ্রামী ও শ্রেণী সচেতন নেতৃত্বে সংগঠন-সংগ্রামকে সুসংহত করার লক্ষ্যে এ সময়ে সারাদেশের নেতা-কর্মিদের শ্রমিক শ্রেণীর রাজনৈতিক দর্শন-আদর্শ ও তাত্ত্বিক অবস্থান সম্পর্কে পড়াশোনা এবং জানাশোনা বাড়িয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।।
এছাড়াও নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার লকডাউনের নামে অন্যান্য শ্রমজীব মানুষের সাথে প্রায় ৩০ লক্ষ হোটেল শ্রমিকককে কর্মহীন করে রেখেছে। কিন্তু তাদের খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নি। ঈদের আগে প্রদর্শনীমূলক নামকাওয়াস্তে কিছু ত্রাণ তৎপরতা চালানোর নামে সংগঠন সমূহকে তাতে যুক্ত করে নেতৃত্বকে শ্রমিকদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। শ্রমিকদেরকে সরকারের এ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন করে শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন-বোনাস ও স্বল্পমূল্যে রেশন প্রদানের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।
সভায় হোটেল শ্রমিকদের করোনা ভ্যাকসিন প্রদাান করে দ্রুত সময়ে পুরোমাত্রায় হোটেল রেস্টুরেন্ট চালু, বেতন-বোনাস প্রদান ও কর্মহীন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রদানের দাবিতে আগামি ১২ জুলাই সারাদেশে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *