টেকসই পরিবেশ রক্ষায় ইলেকট্রনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আইনের প্রয়োজনীয়তা

নিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক বর্জ্য (ই-বর্জ্য) এবং এর ব্যবস্থাপনার ক্রমবর্দ্ধমান সমস্যা সমাধানের জন্য  যথোপযুক্ত আইন ও বিধিমিালা প্রণয়ণের দাবি করেন বক্তারা। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ইলেকট্রনিক বর্জ্য এবং এসব বর্জ্য সীসা, পারদের মতো আরো অনেক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি থাকে যা মাটি,পানি, বায়ু দূষণের পাশাপাশি এর ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবনকেও বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।

গবেষণা সংস্থা ভয়েস ফর ইন্টারএক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস) ‘টেকসই পরিবেশে রক্ষায় ইলেকট্রনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আইনের প্রয়োজনীয়তা’ র্শীষক এক অনলাইন প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে আজ। ভয়েস এর নির্বাহী পরিচালক আহমদে স্বপন মাহমুদ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। আলোচক হিসেবে বাংলাদশে পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, সেতুর নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের, অধ্যাপক আফজাল রহমান এবং প্রথম আলোর পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিক ইফতেখার মাহমুদ, যায় যায় দিনের বিজনেস এডিটর আহমেদ তোফায়েল অংশগ্রহণ করেন।

ভয়েসের প্রোগ্রাম অফিসার আফতাব খান শাওন মূল বক্তব্য উপস্থাপনে বলেন, বাংলাদেশে ২০১৮ সালে ৪ লাখ মেট্রিকটন ই-বর্জ্য তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৫ লাখ ৫০ হাজার টন ই–বর্জ্য তৈরি হয়েছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে বছরে ৪৬ লাখ ২০ হাজার টন মানবদেহের জন্য মারাত্বক ওই সব -বর্জ্য তৈরি হবে। এছাড়াও প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৩০২টি টিভি অকেজো হয়ে যায় এবং তা থেকে ১৭ লাখ টন বর্জ্য তৈরি হয়। ৮৩ শতাংশ মানুষ এসব বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসে।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমদে স্বপন মাহমুদ বলেছেন যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তিগত বিকাশ এবং বাংলাদেশের র্অথনীতি দ্রুত বিকাশের কারণে মোবাইল, কম্পিউটার , গ্রাহক ইলেকট্রনিক পণ্য এবং ঘরের সরঞ্জাম সহজলভ্য হয়েছে। এর ফলে বাজারে পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এসব ইলেকট্রনিক পণ্যের মেয়াদকাল শেষ হবার পর নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

সাংবাদিক ইফতখার মাহমুদ বলেন, খুব কম সংখ্যক ইলকেট্রনিক পণ্য থেকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ধাতু বের করে নেয়া হয় এবং বাকী অংশগুলি উন্মুক্ত স্থল, কৃষিজমি এবং খোলা জলাশয়ে ফেলে দেয়া হয়। এতে করে পরিবেশের উপর বিপুল নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বৈদ্যুতিক পণ্য আমাদের দেশে তৈরি হয়। তাই এসব পণ্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেগুলোর ব্যবস্থাপনা নিয়েও কোম্পানিগুলোর দায় নিতে হবে।
বাপা’র যুগ্ন সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন যদিও ডিজিটাল প্রযুক্তি এসডিজির লক্ষ্য অর্জন এবং ডিজিটাল অর্থনীতির সুযোগ তৈরি করেছে কিন্তু অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বড় চ্যালেঞ্জটি হলো ই বর্জ্য পরিমাণ দিনের পর দিন বাড়ছে কিন্তু তা ব্যবস্থাপনার জন্য আইন নেইএবং উদ্যোগও নেই।ফলে পরিবেশের মারাত্মকভাবে ক্ষতি হচ্ছে।
আলোচকগণ ই বর্জ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, যথার্থ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এবং ই বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের আহবান জানান। এ লক্ষ্যে ই-বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেন বক্তারা। সঠিক আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারী-বসেরকারী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আহ্বান জানানো হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *