মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ কর্তৃক আয়োজিত নজরুল জয়ন্তী উদযাপন

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ ইতিহাস। যুদ্ধ হয় না দেখে কবি অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। কবি প্রায়ই বলতেন, আমার তো বসে থাকতে আর ভালো লাগেনা। আমি যুদ্ধ চাই, আর কতদিন পরাধীনতার মধ্যে থাকবো। সেনাবাহিনীতেও যোগ দিয়েছিলেন কবি। এই বাংলাসহ ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য কবি সত্যিই অস্থির মনা হয়ে উঠেছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী (২৫ মে) বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে কলেজ কর্তৃক আয়োজিত ১২৪তম নজরুল জয়ন্তী ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

নজরুলের স্মৃতির স্মরণে প্রধান অতিথি আরও বলেন, স্কুলের পুঁথিগত কোনো শিক্ষা বা সার্টিফিকেট ছিল না কবি’র । প্রকৃতির কাছ থেকে তিনি শিখেছেন। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে কবি আমাদের জাতীয় কবির মর্যাদা লাভ করেছেন। ১৪১পংক্তির কবিতা এক বসায় তিনি লিখেছেন। বিস্মিত অসাধারণ প্রতিভা, কাব্যের জন্য জেলও খেটেছেন তিনি। বিদ্রোহী কবিতা-রণসংগীত শুনে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে নেমেছেন এবং অনেকেই আত্মোৎসর্গ করেছেন। ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ লেখাটি শিকল ভাঙতে সাহস যুগিয়েছে স্বাধীনতাকামীদের।

মমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবু তাহের এর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন নজরুল জয়ন্তী উদযাপন কমিটি ২০২৩ এর আহবায়ক প্রফেসর ড. মোঃ জুলফিকার হায়দার।

আহবায়ক বলেন, আজকের এই দিনে সমগ্র বাংলাদেশে আমাদের জাতীয় কবির জন্মদিন পালিত হচ্ছে। নজরুল শুধু কবি ছিলেন না। তিনি কম্পোজার ছিলেন, সম্পাদক ছিলেন এবং চলচ্চিত্রও পরিচালনা করেছেন। প্রথম মুসলিম চলচ্চিত্র পরিচালক তিনি। নজরুলের বহুমাত্রিকতা বলে শেষ করা যাবে না। ছয়টি নতুন ছন্দ বাংলা কাব্যে প্রবর্তন করেছেন, সংস্কৃত থেকে তিনটি ছন্দ এনেছেন এবং সফল প্রয়োগ করেছেন তিনি। তিনি অনুবাদ সাহিত্যে ছয়টি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর তাহমিনা পারভীন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বক্তারা বলেন, নজরুল শুধু কবিই নয় সাধকও ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে এই দিনে আবারো স্মরণ করি কারণ তিনি নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন। কলকাতায় হরতাল হয়েছিল, দিল্লিতে মিছিল হয়েছিল, সারা ভারতে তোলপাড় হয়েছিল নজরুলকে ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নজরুলকে ফিরিয়ে দেননি।

আলোচনা সভায় কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষকমন্ডলীসহ বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগীবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, রাজনৈতিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. শিব্বির আহমদ এ অনুষ্ঠানের আলোচক ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *