শেরপু‌র হাসপাতা‌লে কান্না করায় শিশু‌কে ছুঁড়ে ফেলার হুম‌কির অভিযোগ এক নার্সের বিরুদ্ধে

সুমন কুমার দে,শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরপুর সদর হাসপাতালের সপ্তম তলার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা চার মাসের শিশু লাবেল হাসান কান্না করায়।
সপ্তম তলা থেকে ছুঁড়ে ফেলার প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আছমা বেগমের বিরুদ্ধে। ২৮মে সন্ধ্যায় শেরপুর ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই শিশু শহরের মোবারকপুর মহল্লার মোহর উদ্দিনের ছেলে।
শিশুর মা চম্পা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার ২৬মে রাতে ঠান্ডাজনিত রোগের কারণে ওই শিশুকে সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন লাবেলের বাবা মোহর উদ্দিন। এরপর থেকে চিকিৎসা করলেও শুক্রবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে লাবেল হাসান বেশি কান্না শুরু করে। পরে শিশুর মা সিনিয়র স্টাফ নার্স আছমা বেগমের কাছে গেলে চম্পা বেগমকে “উইন্ডল প্লাস”বাইরে থেকে ঔষধ কিনতে পাঠায়। পরে চম্পা বেগম বাইরে থেকে শিশুর ঔষধ কিনে নিয়ে আছমা বেগমকে দিলে ঔষধ নিয়ে হাতে সময় নেই বলে ১ঘন্টা ব্যস্ত দেখান।
এদিকে শিশুটির কান্না বাড়তে থাকে।ছেলের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে, চম্পা বেগম কয়েকবার নার্সকে ডাকার পর রাগান্বিত হয়ে এক পর্যায়ে শিশুকে ঔষধ না দিয়ে সপ্তম তলা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার প্রকাশ্যে হুমকি দেয় ওই নার্স। শুধু তাই নয় পুলিশ দিয়ে ধরে থানায় নেওয়ারও হুমকি দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় শিশুর বাবা ও ওয়ার্ডের অন্যান্য শিশুর অভিভাবকরা।
এদিকে শিশুকে হাসপাতাল থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির ঘটনা শুনার পর কেউ কেউ নার্সদের গালিগালাজ শুরু করলে কৌশলে পালিয়ে যায় ওই নার্স। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করলে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। পাশের বেডে থাকা শিশু রাজু মিয়ার অভিভাবক বলেন, খুব দুঃখজনক একটি ঘটনা দেখলাম। এমন কাজ মোটেও করা ঠিক হয়নি।
ঘটনার পর সিনিয়র নার্স আছমা বেগমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ডিউটিতে থাকা আরেক সিনিয়র স্টাফ নার্স রুবিয়া বেগম বলেন, ‘যখন এমন ঘটনা ঘটেছে তখন আমি ছিলাম না। পরে এসে শুনতে পেলাম এমন একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি তাৎক্ষনিকভাবে শিশুটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ায় শিশুটির কান্না বন্ধ হয়।
সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. খাইরুল কবির সুমন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম, এমন কাজ করে থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোয়ারুর রউফ বলেন, ‘হাসপাতালের নার্স যদি এমন ঘটনা করে থাকে তাহলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *