সরকার-প্রশাসনের সাথে সংবাদপত্রের সম্পর্কে সাংবাদিকদের শ্রেণী সচেতন হতে হবে
একটি প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রশাসনিক শ্রমিক বাদে সাংবাদিক হিসেবে যারা নিয়োজিত থাকেন তারা মূলত নির্বাহী সম্পাদক, যুগ্ম-সম্পাদক, সহযোগী সম্পাদক, বার্তা-সম্পাদক, উপ-সম্পাদক, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, সহকারী সম্পাদক, ফিচার এডিটর, বিশেষ সংবাদদাতা, নগর সম্পাদক। এছাড়াও যুগ্ম-বার্তা সম্পাদক, প্রধান প্রতিবেদক, প্রধান সহ-সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সম্পাদক, সিনিয়র প্রতিবেদক, সিনিয়র সংবাদদাতা, ব্যুরো প্রধান, প্রধান আলোকচিত্র সাংবাদিক, সিনিয়র আলোকচিত্র সাংবাদিক, সিনিয়র কার্টুনিস্ট, সিনিয়র আর্টিস্ট, ক্রীড়া সম্পাদক, বাণিজ্য সম্পাদক, মফঃস্বল সম্পাদক, সম্পাদকীয় সহকারী, রেফারেন্স এডিটর/প্রধান সংবাদ গ্রন্থাগারিক, শিফ্ট-ইনচার্জ ও প্রধান সম্পাদনা সহকারী, সহ-সম্পাদক, নিজস্ব প্রতিবেদক, আলোকচিত্র সাংবাদিক, নিজস্ব সংবাদদাতা, ক্রীড়া প্রতিবেদক, আর্টিস্ট, কার্টুনিস্ট, সিনিয়র সম্পাদনা সহকারী ও সংবাদ গ্রন্থাগারিক, শিক্ষানবিস সহ-সম্পাদক, শিক্ষানবিস নিজস্ব প্রতিবেদক, শিক্ষানবিস নিজস্ব সংবাদদাতা ও সম্পাদনা সহকারী এবং শিক্ষানবিস সম্পাদনা সহকারীরাও সাংবাদিক হিসেবে স্বীকৃত।
বিগত শতাব্দীতেও সমাজ সংস্কার, জাতীয় স্বাধিকার অর্জন বা জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে বিভিন্ন পত্রিকার পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। ফলে যেকোন গণতান্ত্রিক সংগ্রাম ও অধিকার আদায়ে সংবাদপত্রগুলোর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সাথে সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য লড়তে পেরেছে। কিন্তু বর্তমান কর্পোরেট ব্যবস্থাপনার যুগে প্রায় গোটা সংবাদ মাধ্যম কর্পোরেট পুঁজির রাহুগ্রাসে আটকে পড়েছে। দেখা যায়, কর্পোরেট পুঁজিই বিনিয়োগ করে দেশের বৃহৎ মিডিয়া হাউজগুলি গড়ে তুলেছে। এই মিডিয়া হাউজগুলি পরিচালনা করতে মিডয়িা হাউজের মালিকগণ সরকার ও প্রশাসনের সাথে এক ধরণের আপোসের মৈত্রী গড়ে তুলেছে। এই মৈত্রীতেই প্রথম সারির সাংবাদিকদের সংবাদ চর্চা করতে হয়। বৃহৎ মিডিয়া হাউজগুলির এই সিন্ডিকেটে দেশের ছোটখাটো মিডিয়াগুলো প্রায় জিম্মিদশায় । ফলে নগর-মফস্বলের অধিকাংশ সাংবাদিকদেরই সরকার-প্রশাসনের সাথে এক ধরণের আপোসের মাধ্যমে সংবাদ চর্চা করতে হয়। এই কারণে দিনকে দিন সাংবাদিকদের অধিকারগুলো ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা যদি তাদের শ্রেণী অবস্থান নির্ধারণ করতে না পারেন তাহলে তাদের আরো খারাপ পরিণতি ভোগ করার ইঙ্গিত দৃশ্যমান হচ্ছে। সাংবাদিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র ও ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ শ্রম আইন স্বীকৃত বিভিন্ন সুবিধা ও অধিকার আদায়ে তাদের সচেতন হতে হবে। সরকার ও প্রশাসনকে জবাবদিহিতায় রাখার সাথে জনগণকেও তাদের অধিকার সম্পর্কে সজাগ-সচেতন রেখে চ্যালেঞ্জিং পেশা সাংবাদিকদের নীতি-আদর্শে গড়ে তুলতে হবে।