গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা শহিদুল হত্যায় তীব্র ক্ষোভ ও দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি

পোশাক শ্রমিক নেতা শহীদুল হককে হত্যার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ। ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াসিন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় স্থানীয় শ্রমিকদের বরাত দিয়ে জানান, কারখানাটিতে প্রায় সাড়ে ৭ শত জন শ্রমিক কাজ করেন। গত এপ্রিল মাসে ওই কারখানার ৫০ জন শ্রমিকের ৫০ শতাংশ বেতন বকেয়া রাখে কারখানার মালিকপক্ষ। গত মে মাসে আবারও কারখানা সকল শ্রমিকদের বেতন ভাতা বকেয়া রাখা হয়। গত ২০ জুন মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও কারখানার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করে নি। ওই দিন শ্রমিকরা দিনভর বেতন-ভাতার জন্য অপেক্ষা করে বিকেলের দিকে বিক্ষোভ করে চলে যান। পরদিন বুধবার (২১ জুন) সকালে কারখানার শ্রমিকরা আবারও কারখানায় আসলে কারখানা তালাবদ্ধ দেখতে পায়। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এ ঘটনার তিন দিন পর ২৫ জুন রোববার রাতে বেতন পরিশোধের বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম। বিষয়টি সুরাহা না হলে সোমবার সকালে শ্রমিকদের নিয়ে কলকারখানা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে যাবার ঘোষণা দিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে যেতে প্রধান ফটকের কাছে যান শহিদুল। এ সময় সন্ত্রাসীরা শহিদুলকে কারখানার প্রধান ফটকের কাছ থেকে ধরে এনে মারধর করতে থাকে। এ সময় আরো ২ জন শ্রমিকনেতাকে মারধর করা হয়। কারখানার শ্রমিকরা তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার তায়রুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শহিদুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া বহিরাগত সন্ত্রাসীরা শ্রমিকনেতার গায়ে হাত তোলার কথা নয়। এ ঘটনার জন্য অবশ্যই কারখানা মালিক দায়ী এবং তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করাসহ ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার সাথে জড়িত সকল দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। একই সাথে কয়েক মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন বোনাস পরিশোধ না করার পরও মালিকের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও তার কর্মকর্তারা এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলে নেতৃদ্বয় বিবৃতিতে উল্লেখ করেন। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরো বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরের মালিকরা মুখে ট্রেড ইউনিয়নের অধিকারের কথা বললেও কারখানায় শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রদান করে না। বরঞ্চ শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়নের সাথে সম্পর্কিত হতে চাইলে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে শ্রমিকদের উপর হামলা ও মারধোর করা হয়। একই সাথে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় শ্রমিকদের হয়রানি করা হয়। শহিদুল হত্যার ঘটনাটি গার্মেন্টস সেক্টরের মালিকদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পরিণতি। উল্লেখ্য যে, নিহত শহিদুল বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন নামে একটি শ্রমিক সংগঠনের গাজীপুর জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। একই সাথে তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি) এর নেতা ছিলেন।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *