সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

ময়মনসিংহে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে জেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ এপ্রিল) ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন এর আয়োজনে দপ্তর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।

গড় আয়ু বৃদ্ধি এবং একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি জনিত কারণে ভবিষ্যতের নির্ভরশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিধায় একটি টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে জাতীয় সংসদ টেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩ প্রণয়ন করেছে। প্রণীত আইনের বিধান অনুযায়ী গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’।

সভায় জানানো হয় যে, ১৮ বৎসর বা তদূর্ধ ওতে পঞ্চাশ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশী তবে বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছর ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণ স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হতে নিরবিচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন। প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকগণ যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই তারা পাসপোর্ট এর ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশনের পর ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা প্রদান করে পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন। প্রাপ্তির ক্ষেত্রে চাঁদাদাতাকে কোন অফিসে আবেদন করতে হবে না। নিরবিচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান করলে ৬০ বছর পূর্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইএফটি এর মাধ্যমে তার ব্যাংক একাউন্টে মাসিক পেনশন টাকা জমা হবে। এছাড়াও নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, গৃহনির্মাণ, গৃহ মেরামত এবং সন্তানের বিবাহের ব্যয় নির্বাহী জন্য তা ইচ্ছা করলে পেনশন ফান্ডে শুধু তার জমাকৃত অর্থে ৫০% ঋণ হিসেবে উত্তোলন করতে পারবেন, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধার্যকৃত ফি সহ সর্বোচ্চ ২৪ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে এবং সমুদয় অর্থ চাঁদাদাতার হিসেবে জমা হবে। সকল স্কিমের জন্য চাঁদার কিস্তি চাঁদা প্রধানকারীর পছন্দ মাফিক মাসিক, ত্রৈমাসিক বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ থাকবে। চাঁদাদাতাগন ইচ্ছা করলে অগ্রিম হিসেবে চাঁদার টাকা পেনশন ফান্ডে জমা করতে পারবেন। চাঁদাদাতা পেনশনে থাকাকালীন তার বয়স ৭৫ বয়স পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনের নমিনি বা নমিনীগণ বা বৈধ উত্তরাধিকার গণ অবশিষ্ট সময়ের জন্য উক্ত পেনশন প্রাপ্ত হবেন।

সভায় আরো জানানো হয় যে, সার্বজনীন পেনশন স্কিমের ০৪টি পেনশন স্কিমে ভাগ করা হয়েছে। প্রগতি স্কিম (সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণের জন্য) ২০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা মাসিক চাঁদা ও সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪২ বছর চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সুরক্ষা স্কিমে (সহকর্মে নিয়োজিত নাগরিকগণের জন্য) এ স্কিমে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা ও সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে ৪২ বছর চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সমতা স্কিম (সহকর্মে নিয়োজিত স্বল্প এর নাগরিকগণের জন্য অংশ প্রদায়ক পেনশন) দরিদ্র সীমার নিম্নে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিগণ এ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। এ স্কিমে চাঁদাদাতা ৫০০ এবং সরকারি অংশ ৫০০ টাকা প্রদান করা হবে। প্রবাস স্কিম (প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য) এ স্কিমে সর্বনিম্ন ৫০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা সর্বনিম্ন ১০ থেকে ৪২ বছর পর্যন্ত প্রদান মাধ্যমে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। চাঁদাদাতা গণ চাঁদা প্রদানের ক্ষেত্রে আয়ক গণনায় কর রেয়াত সুবিধা পাবেন এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে। এছাড়াও যে কোন সময় চাঁদার হার ও স্কিম পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, কর্মজীবন শেষে নিশ্চিত জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজন সঞ্চয়। সুরক্ষিত সঞ্চয় পরিকল্পনায় আরেক নাম সর্বজনীন পেনশন।
কর্মজীবনের উপার্জিত টাকার কিছু অংশ পেনশন স্কিমে বিনয়ক করে একজন নাগরিক নিশ্চিত করতে পারবেন বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক নিরাপত্তা। পিআইডি, ময়মনসিংহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *